রাজধানীর ফুটপাত দখলে নার্সারি: চরম ভোগান্তিতে পথচারী, নেপথ্যে রাজনৈতিক মদদ!
ঢাকা:
ঢাকার জনগুরুত্বপূর্ণ ফুটপাতগুলো এখন ভাসমান নার্সারি ব্যবসায়ীদের দখলে। ফকিরাপুল, ধানমন্ডি, দোয়েল চত্বরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এই অবৈধ দখলের কারণে পথচারীরা বাধ্য হচ্ছেন মূল সড়কে হাঁটতে, যা প্রতিনিয়ত বাড়াচ্ছে যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

পথচারীদের দুর্ভোগ চরমে
বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, টব ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের নিচে ফুটপাতের প্রায় অর্ধেক অংশ হারিয়ে গেছে। ফলে এক বা দুজন পথচারীও একসাথে হাঁটার সুযোগ পাচ্ছেন না, তাদের নেমে আসতে হচ্ছে মূল সড়কে। সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, মেয়র বা প্রশাসন পরিবর্তন হলেও এই ভোগান্তির কোনো পরিবর্তন হয় না।
রাজনৈতিক মদদ ও দুর্নীতির অভিযোগ
দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ ব্যবসা চলার পেছনে রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক মদদ এবং প্রশাসনের গাফিলতি। ক্যামেরার আড়ালে ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেন যে, স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় তাদের এই কার্যক্রম চলছে। এমনকি রাতের বেলায় বাতি জ্বালানোর জন্য অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে কিছু অসাধু বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাকে বাড়তি অর্থ দিতে হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের অস্পষ্ট আশ্বাস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা ফুটপাত ইজারা দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তবে তারা কেবল ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাঝে মাঝে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার অস্পষ্ট আশ্বাস দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে না পারাটা স্পষ্টতই প্রশাসনের ব্যর্থতা।
স্থায়ী সমাধানের পথে নগর পরিকল্পনাবিদরা
নগর পরিকল্পনাবিদরা এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সমন্বিত পদক্ষেপের ওপর জোর দিয়েছেন। তাদের পরামর্শ হলো, যেহেতু নার্সারি সবুজায়ন ও পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তাই ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য মাস্টার প্ল্যানের অংশ হিসেবে অথবা খালের পাড়ের মতো নির্দিষ্ট বিকল্প জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে নার্সারি ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন এবং ফুটপাত দখলমুক্ত না করা হলে, রাজধানীতে পথচারীদের ভোগান্তি চলতেই থাকবে।
কোন মন্তব্য নেই