ads

Breaking News

হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়েও মেসির পেনাল্টি না নেওয়ার কারণ
মাইক্রোসফট কি টিকটককে কিনে নিচ্ছে?
Ugh PBR&B kale chips Echo Park.
মাইক্রোসফট কি টিকটককে কিনে নিচ্ছে?.
Authentic bitters seitan pug single-origin coffee whatever.
মাইক্রোসফট কি টিকটককে কিনে নিচ্ছে?
Vice mlkshk crucifix beard chillwave meditation hoodie asymmetrical Helvetica.
Ugh PBR&B kale chips Echo Park.
Gluten-free mumblecore chambray mixtape food truck.
Authentic bitters seitan pug single-origin coffee whatever.

আব্বাসীয় খিলাফতের সমাপ্তি কেন মিশরে হলো?

 


আব্বাসীয় খিলাফত মুসলিম জাহানের তৃতীয় খিলাফত হিসেবে পরিচিত। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের বংশধরদের কর্তৃক ইরাকের কুফায়‌। প্রাথমিকভাবে আব্বাসীয় খিলাফত কুফায় প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে এর রাজধানী বাগদাদে স্থানান্তর করা হয়। তৎকালীন বাগদাদ নগরী শুধু মুসলিম বিশ্ব নয় বরং গোটা পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ শহর বলে পরিচিত ছিল। বিজ্ঞান, সাহিত্য, জ্যোতির্বিদ্যা, গণিতশাস্ত্র, চিকিৎসাবিদ্যা এবং ধর্মীয় জ্ঞান চর্চার কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাগদাদ। আব্বাসীয় খিলাফত সময়কালকে মুসলিম জাহানের শ্রেষ্ঠ সময় বা স্বর্ণযুগ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকা এই সাম্রাজ্য ১২৫৮ সালে হালাকু খান কর্তৃক ধ্বংস হয়।

আব্বাসীয় খেলাফতের সমাপ্তি এর কারণ:

🛑যোগ্য নেতৃত্বের অভাব: আব্বাসি বংশের সর্বমোট সাইত্রিশ জন খলিফার মধ্যে প্রথম দিকের কয়েকজন খলিফা বিশেষ করে মনসুর, মাহদী, হারুন ও মামুন বিশ্বের সর্বাপেক্ষা পরাক্রান্ত শাসকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তারা অসাধারণ শাসন দক্ষতা এবং বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কিন্তু মুতাসিমের পরবর্তী অধিকাংশ খলিফাই অযোগ্য, অকর্মণ্য এবং দুর্বল ছিলেন। অযোগ্য খলিফাগণ শাসনকার্যের প্রতি উপেক্ষা ও অবহেলা প্রদর্শন করে ভোগবিলাসে মত্ত থাকতেন। ফলে, সাম্রাজ্যে অরাজকতা দেখা দেয়, সৈন্যবাহিনী উৎশৃংখল হয়ে ওঠে এবং কুচক্রী ও স্বার্থপর আমীর ওমরাহগণের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে আব্বাসি সাম্রাজ্য পতনের দিকে দ্রুত ধাবিত হতে থাকে।

🛑সাম্রাজ্যের বিশালতা এবং সেগুলোতে সুশাসনের অভাব: আব্বাসীয় খেলাফতের সীমানা ছিল পশ্চিমে লিবিয়া থেকে এবং পূর্বে ইরান পর্যন্ত এবং উত্তরে আজারবাইজান থেকে দক্ষিনে সমগ্র আরব উপদ্বীপ। এত বড় সুবিশাল সাম্রাজ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা অযোগ্য খলিফাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এছাড়াও আব্বাসি খলিফাদের শাসন-কাঠামো ও ত্রটিপূর্ণ ছিল। তাদের শাসনামলে প্রাদেশিক শাসনকর্তাগণ রাজস্ব ও সামরিক শাসন ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করত। ফলে, প্রদেশপালগণ ক্ষমতা এবং অজস্র অর্থ সঞ্চয় করে সুবিধামত কেন্দ্রের ক্ষমতা অস্বীকার করতেন এবং কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্য হয়ে অনেক সময় বিদ্রোহী প্রাদেশিক সরকারের স্বাধীনতা মেনে নিতেন। খলিফাদের অযোগ্যতার সুযোগে দশম শতাব্দীর শুরু থেকে বিভিন্ন অঞ্চল স্বাধীন হতে শুরু করে। সে সময় ইদ্রিসীয়, সামানীয় , সেলজুক, ফাতেমীয় বংশের উত্থান হয়। ফলে বিশাল মুসলিম সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। এই সমস্ত রাজ্যের মধ্যে কোন সদ্ভাব ছিল না। একটার সাথে আরেকটার বিরোধ লেগেই থাকত। মূলত আব্বাসীয় খিলাফতের পতন এখান থেকেই শুরু হয়।

🛑দুর্বল সেনাবাহিনী: আব্বাসি বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ খলিফাগণ রাজ্য বিজয় অপেক্ষা সাম্রাজ্যে মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে বেশি মনোযোগী ছিলেন। তারা শুধু পূর্বপুরুষদের শৌর্যবীর্যের কথা শুনতে পছন্দ করতেন। নতুন রাজ্য জয়ের কোন আকাংখাই তাদের মধ্যে ছিল না। সে কারণে সেনাবাহিনী দিন দিন দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়ে। আধুনিকায়নের অভাব এবং বহির্বিশ্বের শক্তিগুলোর সাথে পাল্লা দিতে না পারার কারণে পরবর্তীতে আব্বাসীয় খিলাফত রীতিমতো ধ্বংস হয়ে যায়।

🛑মোঙ্গলদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা: মোঙ্গলদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল আব্বাসীয় খলিফাদের পতনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ। মোঙ্গল সাম্রাজ্য সে সময় মঙ্গোলিয়া থেকে ধীরে ধীরে পশ্চিমের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। একে একে বেইজিং,ইস্পাহান, সমরখন্দ, বুখারা, আলেপ্পোর মতো বড় বড় শহরগুলোর পতন ঘটেছিল। মঙ্গোল শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার মতো সামরিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কোন রকম দক্ষতাই ছিলনা আব্বাসীয় খলিফাদের মধ্যে। অপরদিকে ৫০০ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা আব্বাসীয়দের ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের কথা মঙ্গল নেতারা আগে থেকেই জানতো। তাদের লক্ষ্য ছিল বাগদাদ নগরী ধ্বংস করে সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করা।

🛑বাগদাদে মঙ্গোল আক্রমণ: ১২৫৮ সালে মঙ্গোল নেতা হালাকু খান বাগদাদ অবরোধ করেন এবং ১২ দিন বাগদাদ শহরে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। সে সময়টাতে এত বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছিল যে আনুমানিক ১০ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছিল। রাতারাতি আরব্য রজনীর শ্রেষ্ঠ শহর মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা কেন্দ্র বায়তুল হিকমার সমস্ত বই পুড়িয়ে ফেলা হয়। মুসলমানদের ৫০০ বছর ধরে গড়ে তোলা জ্ঞানের ভান্ডার চিরতরে হারিয়ে যায়। আব্বাসীয় বংশের শেষ খলিফা মুসতাসিম বিল্লাহকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আর এভাবেই পতন ঘটে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী আব্বাসীয় খিলাফতের।

🛑মামলুক সালতানাতের প্রতিষ্ঠা: বাগদাদ ধ্বংস করার পর মঙ্গোল বাহিনীর পরবর্তী অভিযান ছিল মিশরের মামলুকদের বিরুদ্ধে। সে সময় মামলুক সাম্রাজ্য জয় করা মানে সমগ্র উত্তর আফ্রিকা জয় করে ফেলা। আর আফ্রিকা দিয়ে জিব্রাল্টার প্রণালী হয়ে ইউরোপে ঢুকতে পারলে গ্রেট চেঙ্গিস খানের বিশ্বজয়ের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়ে যেতো। তাই মঙ্গোলদের কাছে মামলুক সালতানাত ধ্বংসের কোন বিকল্প ছিল না।এ কারনে ১২৬০ সালে ফিলিস্তিনের আইন জালুত প্রান্তরে মঙ্গল বাহিনী এবং মামলুক সালতানাত এর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মামলুকদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সাইফুদ্দিন কুতুজ। ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে মুসলিম বাহিনী জয়ী হয় আর মঙ্গোলদের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন চিরকালের মতো ধূলিসাৎ হয়ে যায়। অবশেষে দুই বছর খিলাফত শূন্য থাকার পর মামলুক সালতানাত কর্তৃক মুসলিম সাম্রাজ্যের নতুন খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়।

কোন মন্তব্য নেই