ads

Breaking News

হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়েও মেসির পেনাল্টি না নেওয়ার কারণ
মাইক্রোসফট কি টিকটককে কিনে নিচ্ছে?
Ugh PBR&B kale chips Echo Park.
মাইক্রোসফট কি টিকটককে কিনে নিচ্ছে?.
Authentic bitters seitan pug single-origin coffee whatever.
মাইক্রোসফট কি টিকটককে কিনে নিচ্ছে?
Vice mlkshk crucifix beard chillwave meditation hoodie asymmetrical Helvetica.
Ugh PBR&B kale chips Echo Park.
Gluten-free mumblecore chambray mixtape food truck.
Authentic bitters seitan pug single-origin coffee whatever.

ট্রেকিংপ্রেমীদের জন্য আদর্শের স্থান কেওক্রাডং

 কেওক্রাডং




আপনি অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন? পাহাড়ের উচ্চতার প্রতি দুর্বলতা আছে? তবে এই লেখাটি আপনার জন্য। কিছু ভ্রমণ আছে যেগুলো শরীরের ঘাম ঝরাবে।

তেমনি একটি ভ্রমণ কেওক্রাডং। ট্রেকিংপ্রেমীদের জন্য আদর্শের স্থান কেওক্রাডং। বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থিত দেশের পঞ্চম এই পর্বতশৃঙ্গ।
 
বান্দরবান থেকে রওয়ানা হয়ে প্রথম রাত আমরা বগালেক কাটিয়েছি। বগালেকে পূর্ণিমার আলো দেখতে দেখতে কেটে গেছে রাতের অর্ধেক। পরের দিন সকাল ৭টার মধ্যে নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লাম কেওক্রাডংয়ের দিকে। বগালেকের বুকের ওপর দিয়ে যাওয়া রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে হবে। সেই রাস্তার মাথার ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড় যেন স্বাগতম জানাচ্ছে।

কিছুটা পিচঢালা পথ পেরিয়ে আমরা মাটির রাস্তা ধরে এগুতে থাকলাম। যতই ভেতরে যাচ্ছি ততই বুনো পরিবেশ আমাদের রোমাঞ্চকর করে তুলছে। সারি সারি পাহাড়ের ভাঁজ, কখন পাহাড়িদের গ্রাম, কখনো জুম পাহাড়ের বুকের ওপর দিয়ে আপনি চলতে গিয়ে ভাববেন শহুরে জীবন কতটা প্রাণহীন আপনি। এক থেকে দেড় ঘণ্টা হাঁটার পর পৌঁছে গেলাম চিংড়ি ঝরনায়। পাহাড়ের বুক বেয়ে নিচে পড়ছে ঝরনার পানি। ছোট বড় অনেক পাথরের সংস্পর্শে নেমে যাচ্ছে নিচু স্থানে। এখানে খানিকটা বিরতি যাত্রাকে আরামদায়ক করবে।

সেখান থেকে আবার পাহাড়ি পথ ধরে প্রায় দুই ঘণ্টা হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম দার্জিলিং পাড়ায়। চারপাশে পাহাড়ে ঘেরা জায়গার মাঝখানে মূল দার্জিলিং পাড়ার অবস্থান। অসম্ভব সুন্দর একটি গ্রাম। গ্রামটিতে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আবার আমাদের ছুটে চলা। দার্জিলিংপাড়া থেকে দেখা যায় কেওক্রাডং পাহাড়। যতই কেওক্রাডংয়ের কাছাকাছি যাচ্ছি ততই দেখতে পাচ্ছি মেঘ পাহাড়ের মিতালি। একটু ক্লান্তি নেমে আসলেও প্রকৃতির রূপ যেন থামতে দিতে চাই না।



 
প্রায় আরো এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে আমরা পৌঁছে গেলাম দেশের পঞ্চম উচ্চতম পর্বতশৃঙ্ঘ কেওক্রাডংয়ে! বৃষ্টির ঠিক আগ মুহূর্তে আমরা পৌঁছেছি কেওক্রাডং। ততক্ষণে কোন পাহাড়ে বৃষ্টি, কোন পাহাড়ে কালো মেঘ জমেছে। একটু পর কেওক্রাডং পাহাড়ে মেঘেদের হানা। একদম ধোঁয়াটে পরিবেশ। মুহূর্তে সাদা মেঘে ঢাকা। বৃষ্টি, বাতাস, মেঘ সমানে দখলে নিচ্ছে একের পর এক পাহাড়। এ যেন জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত।
 



যতটুকু জেনেছি কেওক্রাডং নামটি এসেছে মূলত মারমা ভাষা থেকে। ‘কেও’ অর্থ পাথর, ‘ক্রা’ অর্থ পাহাড় এবং ‘ডং’ অর্থ সবচেয়ে উঁচু। কেওক্রাডং মানে সবচেয়ে উঁচু পাথরের পাহাড়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা প্রায় ৩ হাজার ১৭২ ফুট। দেশের সর্বচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হলো সাকা হাফং। এটিরও অবস্থান বান্দরবানে।

আপনি চাইলে সেখানে রাত্রিযাপন করতে পারেন। কটেজ এবং খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। কেওক্রাডংয়ের রাত কাটানো সত্যিই লোভনীয়। যদিও আমরা কিছুক্ষণ অবস্থান করে ফিরেছি। অনেকটা বুকে পাথর চেপে ফেরার মত অবস্থা আমাদের। কেওক্রাডং থেকে ফিরতে হবে দুপুর ২টার আগে। ফেরার সময় স্থানীয় ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে।
 
ফেরার পথে মেঘ, পাহাড়, বৃষ্টি যেন একাকার। বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল পথ ধরে নামতে বেগ পেতে হয়েছে। যাওয়ার পথে দার্জিলিংপাড়ায় স্থানীয় এক দোকানে আমরা খাবার অর্ডার দিয়েছিলাম। ফিরে আসার পথে দোকানে ঢুকে দেখি খাবার টেবিলে সাজানো। জুমের ভাত, মিষ্টি কুমড়া ভুনা, ডিম ভাজি, ডাল আর বাঁশের তরকারি। এ যেন অমৃত আস্বাদন।
 
ততক্ষণে বৃষ্টি থেমে গেছে। গায়ের কাপড় কিছুটা শুকিয়ে আমরা একইপথ ধরে ফিরে এসেছি। স্থানীয়দের সরলতায়, আতিথেয়তায় মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। যেতে আমাদের প্রায় চার ঘণ্টার মত লাগলেও আসতে লেগেছে সাড়ে তিন ঘণ্টার কাছাকাছি। ৪টার দিকে আমরা পৌঁছে গেলাম বগালেকে। কেওক্রাডংয়ে রাত্রিযাপন করতে না পারার অতৃপ্তি নিয়ে। এই অতৃপ্তি হয়তো আবার যেতে বাধ্য করবে কেওক্রাডংয়ের পথ ধরে...।

 



কোন মন্তব্য নেই